Skip to content

Latest commit

 

History

History
210 lines (108 loc) · 24.3 KB

ইন্টারভিউ-unknown.md

File metadata and controls

210 lines (108 loc) · 24.3 KB


ইন্টারভিউ

unknown



ফোনের ডিসপ্লেতে অনেকগুলো স্ক্রিনশট স্ক্রল করতে করতে থেমে গেল সে। তিক্তমুখে বাইরে তাকাল। প্রায় নির্জন রাস্তা। ইনসাইড লাইট জ্বালায়নি, গাড়ির ভেতরটা অন্ধকার। ড্যাশবোর্ডের ওপর মুঠোফোনটা রেখে দিতেই ডিসপ্লেটা জ্বলে উঠল। আরেকটা কল এসেছে। তার কোনো সুহৃদ, নয়তো সাংবাদিকদের কেউ।

পরিহাসের হাসি ফুটে উঠল মুখে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে ফাঁকা রাস্তায় ধীরগতিতে এগিয়ে গেল। টের পেল, হাত দুটো কাঁপছে। দীর্ঘক্ষণ কিছু না খেলে এমনটা হয় তার।

প্রধান সড়কের পেছনে, দোতলা একটি রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়িটা থামাল। রাতের এ সময় ভেতরে খুব বেশি লোকজন থাকার কথা নয়। ভেতরে ঢুকে দেখতে পেল, এককোণে বসে মুঠোফোন নিয়ে অলস মুহূর্ত পার করছে দুজন ওয়েটার। কোনো কাস্টমার নেই। তাকে দেখে একজন ফোন থেকে চোখ তুলে তাকাল। অন্য ছেলেটা এগিয়ে এল তার দিকে।

ওয়েটার ছেলেটার চোখমুখ দেখে মনে হলো, তাকে সম্ভবত চিনতে পেরেছে। রাতারাতি একটু বেশি খ্যাতি এসে গেছে, বিড়ম্বনা পোহাতে হবে কয়েকটা দিন।

খাওয়ার সময় দেখতে পেল, ওয়েটার বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছে। তার খাওয়া যখন শেষ, ছেলেটা এগিয়ে এল আবার।

‘আপনার নতুন সিনেমাটা বেশ ভালো হয়েছে... অনেক সুন্দর ছিল।’

টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল, ‘থ্যাঙ্কস।’ গত মাসে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে কোত্থেকে এক উজবুক এসে তার সঙ্গে সেলফি তোলার সময় বলেছিল, ‘আজগর ভাই! আমি আপনার বিশা-আ-আ-আ-ল বড় ফ্যান!’

 ‘আমি আজগর ভাই না,’ নিরসমুখে বলেছিল সে। এই নামের এক বাচাল পলিটিশিয়ানের সঙ্গে তার চেহারার মিল আছে। কিন্তু এই ছেলে তাকে চিনতে ভুল করেনি। তার মানে আজকের এক্সপোজের ঘটনাটাও হয়তো জানে অনেকের মতো।

 ‘দুই বছর আগে আপনার অফিসে গিয়েছিলাম, স্যার... ইন্টারভিউ দিতে।’

ছেলেটার দিকে ভালো করে তাকাল। কখনো দেখেছে বলে মনে হলো না, ‘মনে পড়ছে না আমার।’

 ‘খুবই স্বাভাবিক, স্যার। কত মানুষ আসে আপনার সঙ্গে দেখা করতে... নায়ক হতে, নায়িকা হতে, ডিরেক্টর হতে...’

 ‘তুমি কেন গিয়েছিলে?’

একটু শরমিন্দা দেখাল ওয়েটারকে, ‘নায়ক হতে, স্যার।’

মুচকি হাসল সে। নায়ক-নায়িকা হতেই বেশি মানুষ আসে তার কাছে।

‘আমি কি একটু বসতে পারি?’

‘শিওর।’ নিতান্তই সৌজন্যের খাতিরে বলল।

একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল ওয়েটার, ‘আপনি বলেছিলেন, আমার চেহারা ঠিক নায়কের মতো না।’

প্রডিউসার হিসেবে এ রকম কথা অনেককে বলতে হয় তাকে। গত পরশুও একজনকে বলেছে। ডাক্তারি পাস করা মেয়ে, কে যে তার মাথায় নায়িকা হওয়ার ভূত চাপিয়েছে, কে জানে! দেখতে সুন্দরী হলেও একদমই ফটোজেনিক নয়।

‘আমি অনেক বেশি শুকনা,’ ছেলেটা বলল, ‘...হ্যাংলা... চাপা ভাঙা... চোয়াল বলতে গেলে নেই...চেহারাটা মোটেও নায়কের মতো না।’

একটু সলজ্জ হাসি দিল সে, ‘এই সব বলেছিলাম নাকি?’

‘জি, স্যার। আরও বলেছিলেন, মাথা থেকে হিরো হওয়ার ভূতটা যেন ঝেড়ে ফেলি, অন্য কিছুর দিকে মনোযোগ দিই।’

‘মনে হয় আমার কথা শুনে কষ্ট পেয়েছিলে?’

‘জি, স্যার, অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, একদিন সিনেমার হিরো হব। আয়নার সামনে কত প্র্যাকটিস করেছি...অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমি। কিন্তু আপনার কথাগুলো শোনার পর আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।’

দরকার না হলেও আরেকটা টিস্যু হাতে নিয়ে মুখ মুছতে লাগল সে। ‘সরি ফর দ্যাট। কিন্তু কী বলব... এ লাইনে এ রকম শক্ত কথা বলতে হয় আমাকে... আই ফিল রিয়েলি সরি ফর ইউ।’

মাথা দোলাল যুবক। মুখে তার পরিহাসের হাসি, ‘আপনি জানেন না, ওই দিন আপনার কথাগুলো আমাকে কীভাবে... মানে, একদম শেষ করে দিয়েছিল।’

বিরক্ত হলো সে। ‘সরি বলা ছাড়া এখন আমি কীই–বা বলতে পারি?’

 ‘সরি তখনই মেনে নেওয়া যায়, যখন মানুষ অনিচ্ছাকৃত ভুল করার পর বলে।’

ভুরু কুঁচকে গেল তার। স্থিরচোখে তাকিয়ে রইল কয়েক মুহূর্ত। ‘আমি ইচ্ছা করে ওসব কথা বলেছি... হার্ট করেছি তোমাকে?’

‘জি, স্যার।’ ওয়েটারের চোখেমুখে বিষণ্নতা। ‘সবটাই আপনি করেছিলেন শায়লার জন্য!’

চমকে উঠল সে, ভ্রু দুটো আবারও কুঁচকে গেল, ‘শায়লা?!’

‘আপনার কল্যাণে সে এখন হার্টথ্রব বিউটি কুইন নায়লা!’

‘ওহ্,’ গভীর করে শ্বাস নিয়ে নিল। আজকের এক্সপোজড ঘটনাটা এই নায়িকা-ই ফাঁস করেছে। যদিও মেয়েটার দাবি, এসবের কিছুই সে জানে না। কোত্থেকে কী হয়েছে, বুঝতে পারছে না। তার ফেসবুক আইডি নাকি হ্যাক করেছে কেউ। কিন্তু সে জানে, এর সবটাই জঘন্য ফিল্মি পলিটিকস।

‘ওই দিন সেও ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিল,’ বলল ওয়েটার। ‘আপনি আমার ইন্টারভিউটা ওর সামনেই নিয়েছিলেন।’

নায়লার ইন্টারভিউয়ের কথাটা তার মনে আছে, কিন্তু এই ছেলে ওই দিন ছিল কি না, নিশ্চিত হতে পারল না।

‘তুমি বলছ, নায়লার জন্য আমি তোমাকে ইচ্ছা করে কষ্ট দিয়েছি... এটা কেন মনে হলো তোমার?’

‘আপনার অফিসের রিসেপশনে অপেক্ষায় ছিলাম আমি আর নায়লা। আপনি ওই দিন প্রায় দুই ঘণ্টা দেরি করে এসেছিলেন অফিসে। অপেক্ষা করার সময় নায়লা... মানে শায়লার সঙ্গে যেচে কথাবার্তা শুরু করেছিলাম, এরপর গল্প করতে শুরু করি আমরা। আমার একটা কথা শুনে শায়লা যখন হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছিল, তখনই আপনি অফিসে ঢোকেন। একটু পরই আপনি ওকে ডেকে নেন ভেতরে... আধঘণ্টা পর আমাকেও,’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল যুবক, ‘তারপরই ওর সামনে আমাকে একের পর এক অপমানজনক কথা বলতে শুরু করেন। বুঝতে পারছিলাম, আপনি আমার ওপর রেগে আছেন।’

বাঁকা হাসি ফুটে উঠল তার মুখে, ‘তোমার ধারণা, সিনেমায় অভিনয় করতে চাওয়া একটা মেয়ের জন্য আমি জেলাস হয়ে এটা করেছি?’

‘জি, স্যার।’

সামনের দিকে ঝুঁকে বেশ গর্বিতভাবে বলল সে, ‘ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া... ও রকম সুন্দরী মেয়ে আমার কাছে রোজ রোজ আসে।’

‘কিন্তু রোজ রোজ আপনি কোনো মেয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন না, স্যার!’ স্থিরচোখে তাকিয়ে বলল যুবক, ঠোঁটে রহস্যময় হাসি।

মুহূর্তে তার অভিব্যক্তি বদলে গেল।

‘পত্রিকায় পড়েছি... নিশ্চিত করে জানি না। আপনি কিছু মনে করলেন না তো, স্যার?’

চাপা রাগ দেখা গেল তার চোখেমুখে। ‘বিলটা নিয়ে এসো,’ কাটা কাটাভাবে বলল।

‘স্যার মনে হয় রাগ করলেন...’ কাঁচুমাচু খেয়ে বলল ওয়েটার, ‘সরি, স্যার।’

‘ইটস ওকে,’ হাত তুলে বলল সে।

‘আসলে ওই দিনের ঘটনাটা আমার জীবন এলোমেলো করে দিয়েছিল। হয়তো সে জন্য আমার মধ্যে চাপা রাগ আছে... এখনো।’

‘আমি বুঝতে পারছি না,’ কথার মাঝখানে বাধা দিয়ে বলল সে, ‘তুমি এমনভাবে কথা বলছ, যেন এই দেশে আমিই একমাত্র প্রডিউসার!’

‘দুনিয়াতে অনেক খুনি থাকতে পারে, স্যার কিন্তু কাউকে মারার জন্য একজন খুনিই যথেষ্ট!’ বিস্ফারিত চোখে তাকাল সে।

‘এভাবে বলার জন্য সরি। আমি আসলে বোঝাতে চাইছি, স্বপ্ন ভাঙার জন্য একজনই...’

‘তুমি নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সব দোষ আমার ওপর চাপাচ্ছ,’ কথার মাঝখানে বাধা দিয়ে বলল, ‘ধরে নিলাম আমি তোমার সঙ্গে ইয়ে করেছি... শক্ত করে কিছু সত্যি কথা বলেছি...বাকিরা তো ছিল, ওদের কাছে নিশ্চয়ই গেছ... ওরা কী বলেছে?’

‘সত্যি বলতে, ওই দিনের পর আমি এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম, আর কখনো কোনো প্রডিউসারের কাছে যাইনি।’ তার চোখ দুটো প্রায় ছলছল করে উঠল।

গভীর করে শ্বাস নিয়ে নিজের রাগ সংবরণ করার চেষ্টা করল সে। দয়ার্দ্র কণ্ঠে বলল, ‘তুমি খুব ইমোশনাল... নরম মনের মানুষ। কিন্তু এ লাইনে সবাইকে স্ট্রাগল করতে হয়। একজনের কথায় ভেঙে পড়লে হয় না,’ পানির গ্লাসটা তুলে নিয়ে গলা ভিজিয়ে নিল সে, ‘আসলে তুমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলে। মনে করেছিলে, বাকিরাও একই কথা বলবে।’

‘হতে পারে, স্যার। তবে আপনার কথা আমি শুনেছিলাম। হিরো হওয়ার ভূত মাথা থেকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলে দিই।’

‘আহা! তোমার উচিত ছিল আরও বেশি চেষ্টা করা।’

‘কিন্তু আপনি তো আমাকে চেষ্টা করার কথা বলেননি! বলেছিলেন, আমি যেন মাথা থেকে...’ কথাটা শেষ করল না।

মাথা দোলাল সে। ‘ওটা কথার কথা ছিল...হালকা চালে বলেছিলাম। অনেক সময় এ রকম কথা বের হয়ে যায় মুখ দিয়ে। ওয়েল, সরি অ্যাগেইন... আমার ওভাবে বলাটা ঠিক হয়নি।’

 ‘যা–ই হোক, আমি আর চেষ্টা করিনি। এক বছর বেকার থাকার পর এই রেস্টুরেন্টের চাকরিটা নিই।’

তার চোখেমুখে সহমর্মিতা ফুটে উঠল।

‘সকাল আটটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত কাজ করি এখানে, শুক্রবারের ছুটিও নেই। এটা আমার পছন্দের কাজ না, বাধ্য হয়ে করে যাচ্ছি। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয়। মনে হয়, এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।’

‘তুমি দেখি একদম...’ কথাটা আর শেষ করল না।

‘সুইসাইডাল? আমি কিন্তু আসলেই সুইসাইডাল, স্যার।’

যুবকের দিকে স্থিরচোখে তাকিয়ে রইল সে।

‘গত তিন বছরে দুবার চেষ্টা করেছি।’

‘মাই গড! বলো কী!’

‘কিন্তু কাল রাতে বাসায় গিয়ে একদম ভেঙে পড়েছিলাম।’

‘কেন?’

‘আমার পাঁচ বছরের রিলেশনটা কাল ব্রেকআপ হয়ে গেছে।’

‘ওহ্!’

‘কাল এখানে একটা বিয়ের প্রোগ্রাম ছিল...আমার গার্লফ্রেন্ডের এক কাজিনের...খাবার সার্ভ করতে গিয়ে দেখি...!’ ছলছল চোখে ওয়েটার ছেলেটা মাথা নিচু করে রাখল।

‘তোমার গার্লফ্রেন্ড জানত না, তুমি এখানে কাজ করো?’

মাথা দোলাল যুবক, ‘আমি কখনো বলিনি...ওকে হারানোর ভয়ে।’

‘ওহ্।’

 ‘কাল সারাটা রাত ঘুমাতে পারিনি। এতটা তুচ্ছ আর কখনো মনে হয়নি নিজেকে। এই চাকরিটা করি বলে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবও আমাকে অবজ্ঞা করে... খুবই ছোট হয়ে থাকি, স্যার। কিন্তু কালকের ঘটনায় পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম। কী যে মনে হলো, বলতে পারব না... সকালে এখানে আসার আগে বিষ কিনে ফেলি!’

‘মাই গড?!’ বজ্রাহত হলো সে, ‘ইউ আর আউট অব ইয়োর মাইন্ড!’

ওয়েটারের চোখে–মুখে বিষণ্নতা। ‘ঠিক করেছিলাম, আজকেই সব শেষ করে দেব।’

‘বিষের ইয়েটা...’ হাত বাড়াল সে, ‘...ওটা আমাকে দাও!’ কর্তৃত্বের সুরে বলল।

ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইল ওয়েটার।

‘প্লিজ!’

শার্টের আস্তিন দিয়ে চোখদুটো মুছে পকেট থেকে ছোট্ট একটা শিশি বের করে টেবিলের ওপর রাখল ছেলেটা।

শিশিটা হাতে নিয়ে অবাক হলো সে, ‘এটা তো খালি!’

‘জি, স্যার!’

‘মাই গড! তুত্-তুমি...’  তোতলাল সে।

‘আপনি যা ভাবছেন, তা নয়। আমার প্ল্যান ছিল, আজ বাসায় গিয়ে শেষ করে দেব এই ঘোড়ার আণ্ডা জীবনটা!’ তারপর ঢোঁক গিলল। ‘কিন্তু একটু আগে আপনাকে এখানে ঢুকতে দেখে মাথায় কী যে হলো... আই অ্যাম সরি, স্যার! এক্সট্রিমলি সরি!’

আতঙ্কভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল সে। কথাটা হজম করতে বেগ পাচ্ছে, ‘ক্-কী করেছ তুমি!?’

‘আপনার খাবারে ঢেলে দিয়েছি, স্যার!’

‘হোয়াট!’ মৃত্যুর আতঙ্কে তার চোখ দুটো যেন বিস্ফারিত হলো।

‘আমার ভুল হয়ে গেছে, স্যার! বিরাট বড় ভুল হয়ে গেছে!’

‘ইউ সিক! মার্ডারার!’ হাঁসফাঁস করতে শুরু করে দিল সে।

‘স্যার, প্লিজ... উত্তেজিত হবেন না! এটা সাপের বিষের মতো। বেশি উত্তেজিত হলে, নড়াচড়া করলে দ্রুত কাজ করে! আপনি শান্ত হয়ে বসুন!’

অবিশ্বাসে তাকাল ছেলেটার দিকে। ‘ই-ইউ...কোল্ড ব্লাডেড ম্-মার্ডারার!’ রীতিমতো থরথর করে কাঁপছে এখন। নিশ্বাস দ্রুত হয়ে গেছে তার।

‘গভীর করে শ্বাস নিয়ে শান্ত হয়ে বসে থাকুন, স্যার... তাহলে বিষটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে না।’

‘ইউ সিক!’ মুষ্টিবদ্ধ হাতটা দিয়ে টেবিলে জোরে আঘাত করল। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে উদ্যত হলো সে। ‘বানচোত!’ তার ইচ্ছা করছে ছেলেটার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে। কিন্তু সেটা বাদ দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে গেটের দিকে ছুটে গেল। ‘হায় আল্লাহ!’ অস্ফুটস্বরে বলে উঠল সে। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পা দুটো সামান্য টলে গেলে রেলিং ধরে ভারসাম্য রক্ষা করল।

যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যেতে হবে তাকে!

নিচে এসে পকেট থেকে গাড়ির চাবিটা বের করে দরজার কি–হোলে ঢোকাতে গিয়ে বেশ বেগ পেল।

‘স্যার...’

পেছন ফিরে তাকাল। বিস্ফারিত চোখে দেখতে পেল ওয়েটার ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে।

‘সরি, স্যার।’ ছেলেটার কণ্ঠ একদম স্বাভাবিক। মুখে সামান্য হাসি।

কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারল না সে। ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলছে।

‘ওই দিন আপনি আমার ইন্টারভিউটা নেননি... আজকে আপনাকে পেয়ে আমি শুধু আমার অভিনয়টা দেখাতে চেয়েছিলাম!’

অবিশ্বাসে তাকিয়ে রইল ছেলেটার দিকে।

 ‘বিষটিশ কিচ্ছু মেশাইনি... সবটাই অভিনয়।’